৩০ এপ্রিল অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের ৫৯ তম জন্মদিন। এই বিশেষ দিনে প্রিয় অভিনেতাকে বড়পর্দায় খুবই মিস করছেন ভক্তরা। ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রিয়্যালিটি শোয়ের শ্যুটিংয়ের মাঝেই অসুস্থ হয়ে আচমকাই মৃত্যু ঘটে অভিষেকের। গত মাসেই ছিল অভিনেতার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।
অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতি প্রতিটা মুহূর্তেই অনুভব করেন তাঁর স্ত্রী সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায়। অভিষেকের অবর্তমানে টলিপাড়ার সহকর্মীরা যোগাযোগ রাখেনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে। এই সময় ডিজিটালের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে, অভিষেকের স্ত্রী জানান, “ইন্ডাস্ট্রির কেউই সম্পর্ক রাখেননা, তাতে আমার কিছু যায় আসেনা। অভি চলে যাওয়ার পর আর্থিক অবস্থা নিয়ে অনেক রকম কথা উঠেছিল। আমি এক বছরে দেখিয়ে দিলাম, আর্থিক ভাবে কতটা সচ্ছল। একটা মহিলা হয়ে আরও কত কিছু করা যেতে পারে একবছরে সেটাও প্রমাণ করে দিয়েছি। সবাই হয়তো কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। ঠিক আছে, আমি এসব নিয়ে কিছু মনে করিনা।”
অভিষেক চট্টোপাধ্যায় একের পর এক হিট ছবি দর্শককে উপহার দিয়েছেন। তাঁর সুপারহিট ছবি গুলির মধ্যে অন্যতম ‘সকাল সন্ধ্যা’, ‘বাড়িওয়ালি’, ‘দহন’, ‘ইন্দ্রজিৎ’, ‘তুফান’, ‘সবুজ সাথী’, ‘অগ্নি’, ‘জন্মদাতা’, ‘চাওয়া পাওয়া’, ‘আলো’, ‘পরিণতি’, ‘কুলি’, ‘রাজমহল’,‘গীত সংগীত’, ‘সুজন সখি’, ‘মায়ার বাঁধন’, ‘সখি তুমি কার’, ‘দাদার আদেশ’।
সংযুক্তা জানান মেয়েকে নিয়ে কীভাবে কাটাচ্ছেন স্বামীর জন্মদিনটা ।তিনি আরও জানান যে, কলকাতাতে একটা সংস্থা রয়েছে, সেখানে বাচ্চাদের জন্য উপহার পাঠিয়েছি। সুন্দরবনে শিশুদের একটা বিদ্যালয় রয়েছে, সেখানেও বাচ্চাদের জন্য কেক, চকোলেট এবং উপহার পাঠানো হয়েছে। শুধু এই বিশেষ দিনটিতেই নয়, আমার উপার্জনের কিছুটা অংশ প্রতি মাসে এই দুটি সংস্থাকে দিয়ে, তাদের পাশে সব সময় থাকার চেষ্টা করি। এছাড়াও আজ সুন্দরবনে অভিষেকের নামে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে, আমাকে অনেকবার সেখান থেকে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে। কিন্তু মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এতদূরে যাওয়া আজ সম্ভব নয়। তাই ওদের জন্য বাড়ি থেকেই সব রকমের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।”
সংযুক্তার আরও সংযোজন, “স্বপ্নে দেখেছি, তাই সাঁইবাবার মন্দিরেও যাবো। মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এইদিন বাইরেই খাবো। এসব বলার সময় কিছুটা আবেগপ্রবন হয়ে পড়েন তিনি এবং অভিষেকের সঙ্গে কাটানো কিছু জন্মদিনের কিছু স্মৃতি শেয়ার করেন।
সংযুক্তার কথায়, “ব্যক্তিগত জীবনে অভিষেক খুবই সংসারী ছিলেন। সেই কারণে প্রতিবছর আমাকে এবং ডলকে নিয়েই জন্মদিন উদযাপন করতে পছন্দ করতেন। একবার সারপ্রাইজ দিতে ওকে না জানিয়ে, ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলাম। সন্ধ্যেবেলায় অভি যখন আমাদের নিয়ে বেরোনোর জন্য তাড়া দিতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই সবাই মিলে একসঙ্গে এসে দরজায় বেল বাজায়। সবাইকে হঠাৎ দেখে অবাক অভিষেক। সেটাই ছিল আমার পক্ষ থেকে জন্মদিনে অভির জন্য সেরা সারপ্রাইজ।”
অন্যান্য বছরের মত চলতি বছরেও অভিষেকের জন্মদিনের উপহার কিনেছেন সংযুক্তা। তবে এবার অভিষেক নয়, নিজেই পরবেন অভির জন্য কেনা নতুন পোশাক। বিগত বছরের মত এবারেও কেকের অর্ডারও দেওয়া হয়েছে। অভিষেক খুবই ভোজনরসিক ছিলেন, তাই উপহারের তুলনায় খাবারের প্রতি উৎসাহ ছিল বেশি।